বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর আগামী মাসে
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (ইপিএ) খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী মাসে চুক্তি স্বাক্ষর হবে। বাংলাদেশ প্রথম অন্য কোন দেশের সঙ্গে এ ধরনের অর্থনৈতিক চুক্তি করতে যাচ্ছে। এ চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ জাপানের জন্য ৯৭টি উপখাত উন্মুক্ত করতে সম্মত হয়েছে। অন্যদিকে জাপান বাংলাদেশের জন্য ১২০টি উপখাতে চারটি মোডে সার্ভিস উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একটি ইন্টেন্সিভ নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে আমরা জাপানের সঙ্গে ইপিএ চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করেছি।
আজ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ-জাপান অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি নেগোসিয়েশন বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য সচিব বলেন, ২০২৪ সালের শেষে এ চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। আট দফা বৈঠক শেষে এখন চুক্তিটি চূড়ান্ত হয়েছে।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, এ ধরনের অর্থনৈতিক চুক্তি আমরা আগে কখনো করিনি, যে কারণে এ ক্ষেত্রে কি করতে হয়, সেটাও আমাদের সেভাবে জানা ছিল না। এই সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সেটা করতে পেরেছি।
চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, জাপানের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘ সুসম্পর্ক রয়েছে। তবে এ দেশে জাপানের বিনিয়োগ মাত্র ৫০০ মিলিয়ন ডলার। এটা বিশ্বের অন্য দেশে জাপানের বিনিয়োগের তুলনায় খুব অল্প। আগে যখন আমরা জাপানের কাছে অধিক বিনিয়োগ চেয়েছি, তখন এ ধরনের (অর্থনৈতিক চুক্তি) কোন স্ট্রাকচার ছিল না বলে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হতো।
তিনি বলেন, আমাদের সব সময় ভিয়েতনামের সঙ্গে তুলনা করা হয়। কিন্তু ভিয়েতনামের ৩০ দেশের সঙ্গে এগ্রিমেন্ট আছে। আমরা মাত্র শুরু করছি। তবে যে যাত্রা শুরু হলো, আগামী সময়ে আরো অনেক অর্থনৈতিক চুক্তি করতে পারবো। এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের জন্য সহজ হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই চুক্তি বাংলাদেশের জন্য ব্যাপক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সুফল বয়ে আনবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এর ফলে, বাংলাদেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ-জাপান অর্থনৈতিক সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে।
চুক্তি সম্পাদিত হলে চুক্তি স্বাক্ষরের প্রথম দিন থেকেই ৭৩৭৯ টি পণ্যে জাপানের বাজারে তাৎক্ষণিক শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাবে। অন্যদিকে জাপান ১০৩৯ টি পণ্যে বাংলাদেশের বাজারে তাৎক্ষণিক শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে।
সূত্রঃ পিআইডি